রহস্য উন্মোচন : হুমামূন আহমেদ এর রহস্য গল্প কুকুর!

PaGoaL
By -
0

রহস্য উন্মোচন : হুমামূন আহমেদ এর  রহস্য গল্প কুকুর!

PaGoaL - The Super Psychological Master Mind

শুরুর কথা

শ্রদ্ধেয় প্রয়াত  হুমামূন আহমেদ স্যারের রহস্য গল্প "কুকুর" এ অবসরপ্রাপ্ত পোস্টাল সার্ভিসে থাকা আলিমুজ্জামান তার জীবনের এক অদ্ভুত বিষয়ের সম্মুখীন হউন - তিনি তার জীবকালে এক এমন একটি কুকুর ছানা দেখেন যাকে তিনি বাঁচাতে গিয়েও বাঁচাতে পারেন'নি; ঐ কুকুর ছানাটি মাথা দোলায় এবং ঘুঙুর এর শব্দ হয়!

বৈশিষ্ট্য ও বিশিষ্ট অনুসন্ধান 

মূলত আলিমুজ্জামান সাহেব এমন একজন মানুষ যিনি একটু হলেও ব্যতিক্রমী ধরণের মানুষ যার পরিচয় পাওয়া যায়

 • তিনি কবে রিটায়ার্ড করেছেন সেই তারিখ মনে রাখা 

• বই এর প্রতি স্বাভাবিকের তুলনায় অতিরিক্ত ফ্যাসিনেশান বা একরূপ আসক্তি

 • আপন নাম দ্বিতীয়বার জানতে চেয়ে প্রফেসর সাহেব'কে অনেকটা ইচ্ছাকৃত লজ্জা দেওয়া 

• ভৃত প্রেত প্রভৃতিতে অবিশ্বাসী যৌক্তিক দৃঢ়চেতা মানসিকতা 

• তীব্র পর্যবেক্ষন ক্ষমতা যা কিনা প্রফেসর সাহেবের বিরক্তি বুঝে ফেলা ইত্যাদি 

• একটি কুকুর ছানাকে বাঁচাতে আপন প্রাণ অবধি বিসর্জন দিতে চাওয়া

 • আলিমুজ্জামান দরদী ও উদারমনা মানুষ যা তার প্রাণীর প্রতি দরদ বা অন্যকে বই দেবার মানসিকতায় বোঝা যায় - এরূপ উদার মানসিকতার মানুষগুলো পৃথিবীর পার্থিব স্বার্থ চিন্তায় কট্টর না হয়ে নরম স্বভাবের হয়ে থাকেন; এই বিষয়টা যদিচ স্বাভাবিক তথাপি এটা কট্টর কনশিয়াসের বন্ধনী টপকে সাবকনশিয়াস অধিগ্রহণের উপায়ন্তর ঘটায়

 • যুক্তিবাদী মানসিকতা এবং বৈজ্ঞানিক কারণ অনুসন্ধানে কৌতূহলী হওয়ার পরও আলিমুজ্জামান এর ভেতরে রহস্যময়তায় প্রতি সুপ্ত বিশ্বাস বিদ্যমান!

রহস্য উন্মোচন( হুমামূন আহমেদ এর  রহস্য গল্প কুকুর)

যাই হউক এইসব বৈশিষ্ট্য যদিও খুব একটা চোখে লাগার মতো নয় তবুও তার অদ্ভূতুরে এই কো-ইনসডিয়েন্সে ভোগা ঘটনার পিছনের কারণ অনুসন্ধানে একটু হলেও ইফেক্টিভ তো বটেই; আসুন অনুসন্ধানের মূলোৎপাটন করা যাক....

মূলত পশু প্রেমিক না হয়েও আলিমুজ্জামান যখন ইন্টার ফার্স্ট ইয়ারে পড়তেন [ সেই সময় যখন একটি ছেলে না তো একদম নব কিশোর আর না তো পরিপক্ক যুবক; এমনই মাঝামাঝি সময় যখন আবেগ এবং বিবেকের মিথস্ক্রিয়া চলে] তখন কোন একটা সময় বুধবারে এলাকার দুষ্টু ছোকরা ছেলেরা বিশেষত নান্টু নামের ছেলেটা একটি কুকুর ছানাকে কোরোসিনে ভিজিয়ে আগুনে পুড়িয়ে ফেলার আয়োজন করা হয়; ঐ সময়ে পাশের একজন বললো "ঘুঙুর বাঁধা অবস্থায় কুকুর ছানার গায়ে আগুল লাগিয়ে দিলে সে দৌড়াবে আর ঘুঙুরের আওয়াজ পাওয়া যাবে - যতো জোরে দৌড়াবে ততোই আওয়াজ পাওয়া যাবে - তাতেই মজা হবে" এই কথাটি আলিমুজ্জামান এর ঐ বয়সে বিশেষ সময়ে মনে খুব আচড় কেটেছিলো; এছাড়াও কুকুর ছানাটি যে দৌড়ায়নি সেটাও তার অবচেতন মনে বিশেষভাবে দাগ কেটছিলো বৈকি! সর্বোপরি থার্ড ডিগ্রি বার্ন হওয়ায় দুই মাসের অধিক মৃত্যুপ্রায় থেকে ইনফেকশন সামলিয়ে বেঁচে ফেরা আলিমুজ্জামানের সাইকোলজিতে প্রভাব বিস্তার করে - তাতে পরীক্ষা দিতে না পারা, সকলের আলোচনায় আসা এবং পত্রিকায় কুকুর'কে বাঁচানোর সংবাদে প্রশংসা ইত্যাদি সবকিছুই সাইকোলজিক্যাল ইফেক্টের বিভিন্ন নিয়ামকের ভূমিকা পালন করেছে।

আবার আলিমুজ্জামান যদিও এরূপ কুকুর ছানা বাঁচানোর বিষয়টাকে সচেতন মন দ্বারা বোকামী মনে করে "যেহেতু একটি কুকুর ছানার জীবনের চেয়ে একটি মানুষের প্রাণ তুলনামূলক মূল্যবান" তবুও সাবকনশিয়ালি আবেগ আর বিবেকের তরে প্রাণ অবধি বিসর্জন দিতেও ভাবেনি - তাই বলা চলে তার সচেতন ও অবচেতন মনের স্ট্যাবিলিটি তথা স্থিতিসাম্যতা অদৌ খুব স্বাভাবিক নয়! অন্যদিকে কুকুর ছানাটিকে বাঁচাতে না পারার বিষয়টিও তাকে ভেতর হতে মর্মাহত করেছে - সে নিজে বার্ন হয়ে নিশ্চয়ই বুঝেছে আগুনে কুকুর ছানাটি পুড়ে আগুনে জ্বলার কষ্ট কতোখানি....

হসপিটাল হতে ফিরে বিশ্রাম নেওয়া এমনই এক চাঁদনী রাতে সমস্ত কুকুর যখন আলিমুজ্জামান'কে শ্রদ্ধা দেখাতে জড়ো হলো [পত্রিকাতেও প্রকশিত হয়েছিলো] এবং একই ঘটনা চলতে অনিয়ত বিরতিতে চলতে থাকলো [বিশেষত আলিমুজ্জামানের দৃষ্টিপাত মাত্রই সমস্ত কুকুর মাথানত করে চলে যেতো যেন সম্মান জানানো অনুষ্ঠান শেষ হলো] - এই সবকিছুই কোন এক সময়ে 

সাবকনশিয়াস কর্তৃক উদ্ভূত বিশ্বাসের অদ্ভুত ব্যতিচারে অযাচিতভাবে অপটিক্যাল ইলিউশানের জন্ম দেয় [তার দৃষ্টিগত সমস্যা আছে - যা গল্পে উল্লেখ করা আছে] - যা হতে সৃষ্টি হয় হ্যালুসিনেশান; আর ঘুঙুর এর আওয়াজ সেটাও অডিটরী হ্যালুনিসেশান; এইসব সবকিছুর সম্মিলন জন্ম হয় মায়াময়ী রহস্যাবৃত এক ডিলিউশান!

ঐ আগুনে কাঠকয়লা পোড়া কুকুর ছানা'কে আর কেউই দেখতে পায় না; এটা শুধু আলিমুজ্জামান সাহেব দেখতে পান তার মনের আয়নায় মানবিকতা - ভালোবাসা আর স্মৃতির প্রতিফলন হিসেবে!!!

টুইস্ট

যদিও প্রফেসর সাহেব বৃষ্টির রাতে ওসব দেখতে যাওয়ার চাইতে কাথার নিচে ঘুমাতে যাওয়া শ্রেয় বিবেচনা করেন তবুও কনশিয়াসের যুক্তির চাইতে সাবকনশিয়াসের ইমোশন হয়তো এক অনাকাঙ্খিত অবসেশনে জন্ম দিতে পারে আরেকটা নতুন হ্যালুসিনেশন.....ঘুঙুর গলায় বেঁধে টুংটাং আওয়াজ করা পোড়া কাঠকয়লা ছোট্ট অদ্ভুত সুন্দর একটা কুকুর ছানা!

জেনে রাখুন

PaGoaL এর রহস্য উন্মোচন আর্টিকেল'গুলি বড়ই বেখাপ্পা ধরনের হতে পারে - এই লেখাগুলি নিয়ে হয়তো বিতর্ক বা সমালোচনা কিংবা কারোর মনে সংশয় থাকবে বা জাগবে এটাই স্বাভাবিক; তদুপরি এটা শুধুই PaGoaL এর উপলব্ধি হওয়া নিতান্তপক্ষে ধারণা বৈকি; ইহার চেয়ে বেশী বলাই বাহুল্য! 

আপনার সুন্দর জীবনের তরে নিরন্তর শুভকামনা ও ভালোবাসা রইলো।

#Query_Keyword: Analysis/ হুমামূন আহমেদ

Tags:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)