আয়না পড়া : কুসংস্কার নাকি সত্য জেনে নিন!

PaGoaL
By -
0

আয়না পড়া : কুসংস্কার নাকি সত্য জেনে নিন!

PaGoaL - The Super Psychological Master Mind

প্রারম্ভিকতা

"আয়না পড়া দিয়ে চোর ধরা" বিষয়টি অন্তত আমাদের দেশে সেই অতীত হতেই প্রচলিত হয়ে আছে - এমনকি আজও পাড়াগাঁয়ে কুসংস্কারাচ্ছন্ন মানসিকতা এরূপ "আয়না পড়া" বা "আয়না ভারন" বিষয়টি দেখা মিলে...

কিন্তু এই আয়না পড়া বা আয়না ভারন সত্যিই কি কাজ করে? যদি কাজ করে তবে কতোটুকু করে? এটা কি সত্য নাকি পুরোটাই মিথ্যা? যদি সত্য হয় তবে সেটার কারণ কি? আর মিথ্যা হলে কেনইবা আজ অবধি এই "আয়না পড়া" টিকে আছে সেসব নিয়ে আজ PaGoaL আলোচনা করবে; তাহলে চলুন শুরু করা যাক.....

আয়না পড়া 

আমরা অনেকেই নিশ্চয়ই আয়না পড়া বিষয়টির সাথে একটু হলেও পরিচিত যেখানে ধর্মীয় ধ্যান ধারণার ধারায় কিংবা বিশ্বাসে উপনীত হয়ে জানি "যন্তর মন্তর ফুঁক দিয়ে আয়না পড়লে তাতে কাঙ্খিত বিষয় দেখা যায়" - যদিও এটাকে বেশ কিছু শর্ত জুড়ে দেওয়া থাকে তাতে এমন হয় কেবলমাত্র একজন নির্দিষ্ট ব্যক্তিই যন্তর মন্তর ফুঁকে পড়া আয়নায় দেখতে পাবেন - অন্য কেউ নয়, আয়না পড়া দেখতে অমুক বয়সী তমুক মানুষ হতে হবে, অমুক রাশির ব্যক্তিই শুধু দেখতে পাবে ইত্যাদি ইত্যাদি।

এইসকল শর্তের কারণে আয়না পড়া বা আয়না ভারন আদতে সত্যি কিনা সেটাই একরূপ সন্দিগ্ধতা থেকেই যায় কিন্তু কেননা এখানে প্রমাণ করার কোন অবকাশই থাকে না!

আয়না পড়া কুসংস্কার নাকি সত্য?

যেহেতু আয়না পড়া'তে শুধুমাত্র একজন নির্দিষ্ট ব্যক্তিই দেখতে পারেন এবং অন্যকেউ দেখতে পারেন না তাই এভাবে এটাকে সত্য বলা যায় না; আবার ঐ নির্দিষ্ট ব্যক্তি যদি আদতে সত্যি সত্যিই দেখে থাকেন তবে সেটার প্রমান বা এভিডিয়েন্স হিসেবে কোন তথ্য বা ডাটা [যেমন ক্যামেরার ফটো ক্যাপচার] সংরক্ষণের উপায় নেই [শুধুমাত্র ঐ নির্দিষ্ট সময়ে ঐ ব্যক্তির ব্রেইন ডাটা যদিনা এনালাইসিস করার বাস্তবসম্মত উপায়ান্তর থাকে] তাই সিদ্ধতার স্বাপেক্ষে আয়না পড়া'কে সত্য হিসেবে গ্রহণ করা যায় না [যৌক্তিক বিচারে]।

এখন আমরা যদি যদি বিজ্ঞানের সাধারণ যুক্তি খাটিয়ে "আয়না পড়া বিজ্ঞান সম্মত কিনা?" বিচার করি তবে "আয়না শুধুমাত্র এমন একটি দর্পন যা আলোক প্রতিফলন করে মাত্র" সুতরাং তাতে দূর দূরান্তরের দূরদৃশ্য উপস্থাপিত হবে এমনটা ভাবা নেহায়েত বাচ্চামী বৈকি! আপরাপর আয়না পড়া'তে আয়নাতে ফুঁক দিলে তাতে মুখের বায়ুর সহিত কিছু ক্ষুদ্র অনুজীব ব্যাকটেরিয়া আয়নার পৃষ্ঠে ছড়াবে - দূরান্তের দৃশ্য তো দূরে থাক নিকটের ব্যকটেরিয়া গুচ্ছ দেখতেও ইলেকট্রনিকস মাইক্রোস্কোপ লাগবে!

সবই কি অবাস্তব আর অসম্ভব?!

নাহ হয়তো সবকিছুই অবাস্তব হলেও একদম যে অসম্ভব তা নয় বরং মানব মানের বৈচিত্র্যতায় অনেক সময় আপাত অসম্ভব বিষয়গুলো সম্ভব হতে পারে  বটে - কথার প্যাঁচ লাগলো তাইনা?

এই কথার প্যাঁচ যতোটা কঠিন তারচেয়েও জটিল হলো আমাদের ব্রেইনের নিউরনে নিউরনে যে ইলেকট্রিক ইম্পালসে গড়া নিউরাল নেটওয়ার্কের স্বরূপ কনশিয়াস ও সাবকনশিয়াস মাইন্ডের মধ্যকার ভারসাম্যপূর্ণ রিলেশনশিপ!

এমনটা হয়তো হতেও পারে ঐ স্পেসিফিক পার্সন যাকে আয়না পড়া দেখতে দেওয়া হচ্ছে তিনি হয়তো ইতিপূর্বের এরূপ ঘটনায় সিদ্ধ হতে বাধ্য হয়েছেন [যেমন "তোমাকে আয়না পড়া দেখতে দেওয়া হবে >>> তুমি আয়না পড়া'তে দেখতে পাবে >>> তুমিই দেখতে পাবে আয়নাতে যা যা হচ্ছে তাই তাই" এমন মেন্টাল সাজেশনে অনেকটাই হিপ্নোটাইজড হয়ে যাওয়া - আর উপযুক্ত আবহ তো আছেই]; তবে এখানেও একটা প্রশ্নের অবতারণা ঘটে যে "শুধুমাত্র একটি স্পেসিফিক পার্সনের ক্ষেত্রে এমনটা সম্ভব হলেও বহুদূর দূরান্তের একাধিক মানুষগুলো কিভাবে একই মানসিক অবস্থিতি প্রাপ্ত হয়?" এটার উত্তর আরেকটু জটিল মানসিক মিথস্ক্রিয়া যেমন "কেউ আয়না পড়াতে দেখতে পেয়েছে" এমন ঘটনা মানব মনে এরূপে দাগ ফেলতে পারে যা তার সচেতন স্বত্ত্বার ফিল্টার পেড়িয়ে অবচেতন স্পর্শ করতে পারে!

আবার এমনটাও হয়তো হতে পারে যে স্পেসিফিক পার্সন যেমন ১২ বছরের কম মেয়ে বাচ্চা বা ছেলে বাচ্চা ইত্যাদি তাদের খুব সহজেই কৌশলগত সম্মোহোন করা সম্ভব ইত্যাদি! 

উপসংহার

আয়নাতে পড়া'তে আয়না কোন জাদুকরী জিনিস হয়ে যায় না বরং যা আর যতোটুকু জিনিয়াস ইন্টেলিজেন্স সেটা শুধুই মন তথা মস্তিষ্কের অবদান - অতএব অযৌক্তিকতার মিছে স্বান্তনা ছেলে ভোলানো সুখ পাওয়ার চাইতে তিক্ত সত্যের স্বাদ নেওয়ায় শ্রেয়!

আপনার সুন্দর জীবনের তরে নিরন্তর শুভকামনা ও ভালোবাসা রইলো।

#Query_Keyword: Analysis

Tags:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)