আয়নার ঝলকে আয়নাবাজি!

PaGoaL
By -
0

আয়নার ঝলকে আয়নাবাজি!

PaGoaL - The Super Psychological Master Mind

সচরাচর আমরা সবাই কম-বেশী আয়না দেখে থাকি; ওয়েট....আমরা কি আসলেই আয়না দেখি নাকি আয়নাতে আমাদের প্রতিবিম্ব তথা রিফ্লেকশন দেখি?

প্রতিবিম্ব দেখাতে সমস্যা নেই বটে তবে প্রতিবিম্ব'কে বিশ্বাস করাতেই একটু মিষ্টি মধুর বিড়ম্বনা আছে বৈকি!

আয়নার আয়নাবাজি!

আপনি যে আয়নাতে আপনার "আপনি" কে দেখছেন সেটা কিন্তু আপনি নন বরং আপনার "উল্টো স্বরূপ" - এই উল্টে যাওয়া মানে কিন্তু পায়ের জায়গায় মাথা আর মাথার জায়গার পা নয় বরং বিপরীত পার্শ্ব অবস্থানের পরিবর্তন মাত্র যাকে সোজাসাপ্টা ডান-বাম ফ্লিপিং বলা চলে; আয়নার ক্ষেত্রে এটি একটি স্বাভাবিক প্রতিফলনের বৈশিষ্ট্য।

অথচ আসল আয়নাবাজিটা হলো যে ঐ যে আপনার Repercussions (Reflected From) দেখছেন সেটাকেই কিন্তু আপনার "আপনি" হিসেবে বিশ্বাস করে নিচ্ছেন [আপনি একটি সাদা কাগজে S লিখে সেটা আয়নার সামনে প্রতিফলিত স্বরূপ দেখলে বুঝবেন S এর পার্শ্ব পরিবর্তন ঘটেছে, অপরাপর যদি আপনি একটি বৃত্ত একে সেটাকে আয়নাতে দেখেন তবে হুবহু বৃত্ত'ই দৃষ্টিগোচর হবে বটে কেননা বৃত্তের ক্ষেত্রে প্রতিসম প্রতিফলন ঘটে] কিন্তু আপনার মুখাবয়ব তো আর প্রতিসম নয় তাই রূপকভাবে বললে আয়নাতে আপনি যাকে দেখছেন তিনি আপনার অবাস্তব স্বরূপ বললে খুব একটা ভুল হয়তো হবে না!

ভেল্কিবাজি!

আয়নার আয়নাবাজি খুব সাধারণ একটা ফ্যাক্ট তাইতো আমাদের ব্রেইন আপনার ঐ আপাত অবাস্তব প্রতিবিম্ব'কেই সত্য বিবেচনায় গ্রহণ করে নেয় [তাইবলে আয়নাতে আপনার আপন সৌন্দর্য দেখে যদি আত্ম-অহমিকা অনুভব করেন তবে আপাত অপ্রতিসমতায় সেটা সত্যিই কিন্তু মেটাফোর মিথ্যা বটে] - তথাপি আয়নার ভেল্কি এতোটুকুতেই সীমাবদ্ধ নয় বরং জাদু-তন্ত্রে "চুরি হয়ে যাওয়া বিষয়ে চোরের সন্ধান দিতেও আয়নার বিশেষ ব্যবহার" অদ্যবধি প্রচলিত আছে! অথচ এই ভেল্কির মূল ভাঁওতাবাজি হলো সর্বপ্রথম সন্দেহজনক মানুষগুলোকে আইডিয়েন্টিফাই করা যেন আয়না দর্শন করবেন এমন ব্যক্তির ব্রেইনে পূর্ব হতেই সাসপেক্টিভ পার্সনগুলোর চেহারা গেঁথে যায় - এরপর জাদুর রহস্যময় কুয়াশাবৃত্ত আবোহে [এমনটা বলার কারণ হলো যখন যাদু ক্রিয়া অনুষ্ঠিত হয় তখন সেই পরিস্থিতিতে উপস্থিত অন্য সকলের আগ্রহ আর কৌতূহল মিলেমিশে এক ভারিক্কি পরিবেশের অবতারণা করে - এছাড়াও কঠিন কঠিন দৈত্য দানবের দোহায় কিংবা মস্তিষ্কের সাব-কনশিয়াস আর আনকনশিয়াস রাজ্যের যুক্তিহীন ভোতা বিশ্বাসে উচ্চারিত মন্ত্র-কালাম প্রভৃতির প্রভাবে উদ্ভূত বিশেষ মানসিক অবস্থা] উক্ত ব্যক্তি জাদুকারীর শিথিল হিপ্নোটিক কমান্ড [হিপ্নোটিক কমান্ড এমন হয় যেন মনের ওপর জোরপূর্বক অনুনয়ী বাক্য ব্যাঞ্জনের নির্দেশনায় অতি স্বল্প সময়ের সময়ের জন্য সাময়িক অবচেতন অনুভূতি] দ্বারা সাব-কমশিয়াস'লি মানসিকভাবে প্রলুব্ধ হয় বা হতে বাধ্য হয়।

এক্ষেত্রে জাদুকারী মন্ত্র-তন্ত্রের কারিশমা না থাকলেও হিপ্নোটিক ক্রেডিট দিতেই হয়- তদুপরি আরও সহজ ট্রিক তো তখন হয় যখন সবটাই পূর্ব হতে সাজানো বা পরিকল্পিত থাকে; আবার মাঝে মাঝে আয়নার সক্ষমতার রেইঞ্জ এতোটাই দূরে চলে যায় যেন বলা হয় "অমুক ব্যক্তি অত্র এরিয়ার বাইরে চলে গিয়েছে কিংবা মাঝখানে নদী বয়ে গিয়েছে তাই মন্ত্র কাজ করছে না" আর সবসময়ের জন্য কার্যকরী শক্তিশালী ম্যাজিক তো আছেই "অমুক ব্যক্তি তমুক জায়গায় ভাবুক হয়ে ভনণন করে ঘুরছে" এরূপ মিথ্যা স্বান্তনায় কয়দিন পর মানুষটি এমনিই ফিরে আসবে বৈকি [অথচ বাস্তবতার গ্রাফ বলে হারানো মানুষগুলোর অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কিছুদিন পর সূত্র ধরে খোঁজ মিলেই থাকে - টেলিকমিউনিকেশনের উন্নত সিস্টেমটা অকেজো তো নয়; অপরাপর চোর সনাক্তে সাব-কনশিয়াসের সন্দেহের সহিত কনশিয়াসের সচেতনা মিলে মানব মস্তিষ্ক এমনিতেই সূক্ষ ধারণা ধারণ করতে বড্ড সমীচীন বটে]!

আয়নাতে যতো ভয়!

রাতের বেলা আয়না দেখা যাবে না অথবা বাথরুমের আয়নার দিকে তাকাতে নেই,  ভাঙ্গা আয়না দেখলে চেহারা নষ্ট হয়ে যায় কিংবা হাত হতে আয়না পড়ে ভাঙ্গলে বিপদ আসে প্রভৃতি নান কুসংস্কার আমাদের ছেয়ে আছে; আপনি আমি চাইলেও ঐসব সমাজ হতে সচেতনার স্বার্থে লজিক দিয়ে মানাতে হয়তো পারবো না কেননা "ভয় এবং বিশ্বাসের মাঝে যতোক্ষন না অবধি যুক্তির বিকাশ ঘটবে ততোক্ষন পর্যন্ত গোড়া মানসিকতা রয়েই যাবে" সুতরাং সর্বাবস্থায় Logic এর প্রাধান্য দেওয়ায় হতে পারে স্বার্থক সমাধান।

সবিশেষ বলা চলে "অন্ধের আয়না দেখা আর না দেখা যেমন সমান তেমনি কুসংস্কারের আধারে আয়না দর্শন তেমনি নিরর্থক বিলাসিতা মাত্র" সুতরাং আপন ব্রেইনের যুক্তি ব্যবহার করেই মুক্তির খোঁজ করুন!

আপনার সুন্দর জীবনের তরে নিরন্তর শুভকামনা ও ভালোবাসা রইলো।

#Query_Keyword: Analysis

Tags:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)